প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয় এবং মূত্রনালী সরু হলে করণীয়
প্রিয় পাঠক আপনি হয়তো প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা এবং মূত্রনালী সরু হয়ে যাওয়া নিয়ে
অনেক চিন্তিত আজকের এই পোস্ট টিতে প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয় এবং
মূত্রনালী জনিত সকল সমস্যার সমাধান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করা হয়েছে।
প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয় এবং মুত্রনালি সংশ্লিষ্ট সকল সমস্যার
সমাধানে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে না টেনে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয়
বর্তমানে অনেকেরই প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয় এর মুল
কারন হতে পারে অপরিচ্ছন্নতা এবং নিজের খাদ্যাভাস। অনেক সময় অতিরিক্ত টাইট
আন্ডারওয়ার এবং জামাকাপড় পরলে এ ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রস্রাব করার
পরে ভালোমতো না ধুয়ে রাখলে সে জায়গায় জীবাণু আক্রমণ করে এ ধরনের সমস্যা
ঘটায়।
প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রথমত আপনাকে অবশ্যই পরিষ্কার
পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে এবং সব সময় আপনার ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং
কাপড়-চোপড় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এছাড়াও পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি নিজের
খাদ্যাভ্যাসের দিকেও নজর দিতে হবে খাদ্যাভাসে যে সকল খাবারে চুলকানি এবং এলার্জি
জাতীয় সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
সে সকল খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ মত আপনি চুলকানি
রোধক এবং ঘা নিরাময়ের বিভিন্ন মলম রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন যেগুলো
প্রতিদিন রাতে লাগিয়ে রেখে ঘুমানোর ফলে পরবর্তীতে আপনার এ ধরনের ঘা এবং
চুলকানি জনিত সমস্যা আর থাকবে না।
মূত্রনালী সরু হলে করণীয়
অসচেতনতা এবং এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে মূত্রনালী সরু হয়ে গেলে আপনার যে রোগ হয়
সে রোগটিকে ইউরেথা স্টিকচার বলা হয়ে থাকে । অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ও
সড়ক দুর্ঘটনার আঘাত এর কারণেও এ ধরনের রোগের সম্ভাবনা থেকে যায়। মূত্রনালী
অতিরিক্ত সরু হয়ে গেলে পরবর্তীতে আপনার সকল ধরনের ওষুধ খেয়েও যদি না কমে তবে
সে ক্ষেত্রে আপনাকে সার্জারি করতে হবে।
এই সার্জারিতে সার্জন ইউরেথরা দিয়ে যন্ত্র প্রবেশ করিয়ে প্রোস্টেট সার্জারি
সম্পন্ন করবেন। খুব সহজেই এ রোগ হয়ে গেলেও এর চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল
অনভিজ্ঞ সার্জন দ্বারা যদি আপনি আপনার সার্জারি করান তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে আরো
বেশি সমস্যা ভুগতে পারে। তাই একজন অভিজ্ঞ সার্জনের কাছে চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার অপারেশন খরচ
সাধারণত ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার অপারেশন খরচ রোগীর অবস্থা এবং বিভিন্ন ধরনের
সুবিধার উপর নির্ভর করে থাকে। বাংলাদেশে ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার অপারেশন করার মত
অভিজ্ঞ ডাক্তার খুব কম রয়েছেন। আপনি যদি ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার অপারেশন করানোর
কথা চিন্তা ভাবনা করে থাকেন তবে সে ক্ষেত্রে আপনাকে ভারতে যেতে হবে সেখানে আপনি
অনেক অভিজ্ঞ ডাক্তার পেয়ে যাবেন।
যারা খুব সূক্ষ্মভাবে আপনার এই অপারেশন টি সম্পন্ন করতে পারবে। সাধারণত ভারতের
বিভিন্ন প্রদেশে এই অপারেশনের খরচ বিভিন্ন হতে পারে। তবে এই অপারেশন টি সম্পন্ন
করতে আনুমানিক এক লাখ 20000 থেকে 1 লাখ 60000 টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। তবে
কিছু কিছু চিকিৎসা কেন্দ্রে এর থেকে বেশি কিংবা কম খরচেও আপনি এই অপারেশন টি
সম্পন্ন করতে পারেন।
প্রস্রাবের রাস্তা চিকন হোমিও ঔষধ
সাধারণত প্রস্রাবের রাস্তায় চিকন হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা ওষুধ খেয়ে ভালো
হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। তবে কিছু কিছু হোমিও ওষুধ রয়েছে যেগুলো খেলে আপনার
ভালো হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে কিন্তু অনেকদিন যাবত আপনাকে রুটা গ্র্যাভি
ঔষধটি ব্যবহার করতে হবে নিয়ম মতো। আরো বিস্তারিত জানতে হোমিও ডাক্তারের সঙ্গে
যোগাযোগ করে সবকিছু খুলে বলুন।
প্রসাবের রাস্তায় মাংস বৃদ্ধি
প্রসাবের রাস্তায় মাংস বৃদ্ধি পাওয়া এটা পোস্টেড গ্রন্থির একটা অংশ।
প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে প্রস্তাবের রাস্তায় মাংস বৃদ্ধি পায় এবং
সঠিকভাবে মূত্র ত্যাগ ব্যাহত হয়। অনেক সময় এই প্রস্রাবের রাস্তায় মাংস
বৃদ্ধির জন্য প্রস্রাব করার সময় প্রস্রাবের সাথে রক্তপাত হয়। এ ধরনের সমস্যা
হলে খুব দ্রুত আপনি ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ প্রতিনিয়ত এই রোগটি যদি আপনি
পুষে রাখেন।
তাহলে পরবর্তীতে আপনার আরও সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। সম্ভ্রান্ত একজন ইউরোলজিস্ট
ডাক্তার অমিত ঘোষ এ সম্পর্কে সচেতনতা অবলম্বন করতে বলেছেন এবং খুব দ্রুত
ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে বলেছেন। তিনি আরো বলেছেন এটি একটি জটিল
সমস্যা তাই মূত্রনালীর সমস্যা বেড়ে যাওয়ার পূর্বেই সচেতনতা অবলম্বন করা খুবই
জরুরী।
মূত্রনালীর সংক্রমণের ঔষধ
মূত্রনালীর সংক্রমণ রোধ করার জন্য পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি আপনি একটি স্বল্প
মেয়াদী এন্টিবায়োটিক কোর্স গ্রহণ করতে পারেন এবং প্রতিনিয়ত অ্যান্টিবায়োটিক
গ্রহণ করার সাথে সাথে এক্সামইন নাইট্রোফিউরানটোইন ইত্যাদি ঔষধ গুলো গ্রহণ করতে
পারেন এছাড়াও আপনি চাইলে স্বল্প মেয়াদী ক্যাথেটার ব্যবহার করতে পারেন এই
ক্যাথেটার এর ব্যবহারের পরপরই আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক অবশ্যই গ্রহণ করতে
হবে।
এর ফলে পরবর্তী সময়ে আপনার সংক্রমণের সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে আসবে। সাধারণত
চিকিৎসার মূল বিষয় হলো এন্টিবায়োটিক সমূহ। এজন্য মূত্রনালীর সংক্রমণ কমানোর
জন্য এবং প্রস্রাবের বিভিন্ন সমস্যা দূর করার জন্য এই মুত্রনালীর সংক্রমনের
শুরুতে কিছুদিন এন্টিবায়োটিক এর পাশাপাশি আপনি ফেনাজোপিরিডিন নামক ওষুধ টি
ব্যবহার করতে পারেন যা অত্যন্ত কার্যকরী।
মূত্রনালী সঙ্কীর্ণ হয়ে যাওয়া
মূত্রনালী সংকীর্ণ বা সংকোচন হয়ে গেলে প্রথমত আপনার প্রস্রাবে বাধা অনুভূত হবে
এবং পরবর্তীতে আপনার প্রসাবের নালীটা অত্যন্ত সরু হয়ে যাবে। সাধারণত
স্বাভাবিকভাবে চাপ দিলে মানুষের প্রস্রাব বের হয় কিন্তু যদি প্রস্রাবের নালী
সংকীর্ণ হয়ে যায় তবে সে ক্ষেত্রে আপনার অতিরিক্ত চাপের প্রয়োজন পড়বে
প্রস্রাব করার সময়।
আরও পড়ুনঃহার্ট ভালো আছে কিনা যেভাবে বুঝবেন
যদি আপনার এ ধরনের সমস্যা থাকে তবে সে ক্ষেত্রে আপনার প্রস্রাব করার সময় অনেক
বেশি সময় লাগবে। পরবর্তীতে আপনার প্রস্রাব স্বাভাবিকভাবে না হওয়ার ফলে আপনার
বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং জ্বালাপোড়া হতে পারে। এর ফলে আপনার প্রোস্টেট এবং
কিডনিজনিত বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে এজন্য প্রতিনিয়ত সচেতনতা অবলম্বন
করুন এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন।
শেষ কিছু কথা
আশা করি ব্লগ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয়
এবং মুত্রনালির সকল সমস্যা সমাধান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।প্রতিনিয়ত
এধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং অজানা তথ্য সবার আগে পেতে গুগল নিউজে ফলো করে আমাদের
সাথে থাকুন।গুগল নিউজ ফলো লিংক।
এছাড়াও আপনাদের প্রস্রাবের রাস্তায় ঘা হলে করণীয় এবং মুত্রনালির সকল সমস্যা
সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের মতামত এবং প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে
ভুলবেন না।আমাদের সাপোর্ট টিম খুব দ্রুত আপনার প্রশ্ন এবং মতামত এর উত্তর
প্রদান করবেন।