প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত বিস্তারিত জেনে নিন
আপনারা হয়তো অনেকেই প্রতিনিয়ত কিসমিস খান কিন্তু প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া
উচিত সে সম্পর্কে জানেন না আজকের এই পোস্ট টিতে প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া
উচিত সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে এই পোস্ট টি পড়লে আপনি প্রতিদিন কতটুকু
কিসমিস খাওয়া উচিত এর পাশাপাশি কিসমিস এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো সম্পর্কে
বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন।
এজন্য প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত এবং কিসমিস এর উপকারিতা ও অপকারিতা
গুলো বিস্তারিত জেনে নিতে পোস্ট টি না টেনে শেষ পর্যন্ত পড়তে থাকুন।
প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
আপনারা প্রতিনিয়ত কিসমিস খান কিন্তু কতটুকু পরিমানে কিসমিস খাওয়াটা স্বাভাবিক
সে সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। কোন কিছুই মাত্রা অতিরিক্ত গ্রহণ করা কিংবা
খাওয়া কখনোই ভালো না । এর ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা অনেক ধরনের পরীক্ষা করে মতামত দিয়েছেন যে আপনি যদি
কিসমিস সারারাত পানিতে ভিজিয়ে সকালে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।
সাধারণত দিনে 40 থেকে 50 গ্রাম মত কিসমিস খাবার স্বাভাবিক এর বেশি খেলে আপনার
শরীরের বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা হতে পারে। কিসমিসে উপস্থিত আয়রন পটাশিয়াম প্রোটিন ফাইবার ভিটামিন বি
সিক্স এবং কপার ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ভিজিয়ে
রাখা কিসমিস খেলে আপনি সবচেয়ে বেশি উপকার লাভ করবেন।
কিসমিস এর উপকারিতা ও অপকারিতা
কিসমিস এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলোর মধ্যে অন্যতম উপকারিতা গুলো হলো কিসমিসে
উপস্থিত পুষ্টি উপাদানের মধ্যে পটাশিয়াম রয়েছে যা আপনার রক্তের চাপ কমিয়ে
নিয়ে আসতে অনেক বেশি সহায়তা করবে। এছাড়াও কিসমিসে উপস্থিত রয়েছেন সোডিয়াম।
আপনার শরীরে থাকা উচ্চ মাত্রার রক্তচাপ প্রধান কারণ হলো উচ্চমাত্রার সোডিয়াম।
কিসমিসে উপাদান গুলো সোডিয়ামের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করতে অনেক বেশি কার্যকরী।
উপস্থিত খনিজ গুলি এবং ভিটামিন এর সাথে আরো রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেনট এবং পলি
ফেনাল গুলির মতো অন্যান্য যৌগ গুলির মত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান উপস্থিত রয়েছে
যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে অনেক বেশি কার্যকরী।
আপনি চাইলে প্রতিনিয়ত রাতে 40 থেকে 50 গ্রাম কিসমিস ভিজিয়ে রেখে পরবর্তী দিন
সকালে উঠে খালি পেটে খেতে পারেন যা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে
অনেক বেশি সহায়তা করবে এবং আপনার ওজন না বাড়ার মত সমস্যার সমাধানে এটা অনেক
বেশি কার্যকরী। আপনার শরীরের ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে কিসমিস।
কিসমিসে উপস্থিত ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার শরীরে ভেসে বেড়ানো
ফ্রি রেডি কল ক্যান্সার সেল গুলোর স্বতঃস্ফূর্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং
মেটাস্টাসিসেও অনেক বেশি সহায়তা করে। অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব
প্রতিক্রিয়া ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়িয়ে তুলতে চান সে ক্ষেত্রে আপনারা
প্রতিনিয়ত কিসমিস রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেতে পারেন।
এছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কিসমিস অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন
ধরনের শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি আমি যদি মানসিকভাবে অসুস্থ বোধ করেন তবে
প্রতিনিয়ত কিসমিস খেতে পারেন যা আপনার শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা গুলো দূর করার
পাশাপাশি ভাল ঘুম হওয়াতে সহায়তা করবে। কিসমিসে উপস্থিত আয়রন যা আপনার ভালো
ঘুমে সাহায্য করবে।
সব কিছুর পাশাপাশি আপনার শরীর এবং মন মেজাজ দুটোকে শান্ত রাখতে নিয়মিত কিসমিস
খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কিসমিসের অনেকগুলো উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা
রয়েছে এর মধ্যে অন্যতম অপকারিতা গুলো হল কিসমিস এলার্জির মতো সমস্যা গুলো
বাড়িয়ে ফেলতে পারে তাই যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা আছে তারা কিসমিস খাওয়া
থেকে বিরত থাকবেন।
এছাড়াও কিসমিস মিষ্টি জাতীয় খাবার হওয়াই যাদের ডায়াবেটিস জনিত সমস্যা আছে
তারা অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন না হলে আপনাদের
ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। আপনাদের বদহজম বা খাবার হজমজনিত সমস্যা থাকলে
আপনারা কিসমিস খাবেন না কারণ কিসমিস খাবার হজমের বিঘ্ন ঘটায়।
কিসমিসের ক্ষতিকর দিক
আপনাদের যাদের অ্যালার্জিজনিত সমস্যা রয়েছে তারা কিসমিস খাওয়া থেকে বিরত
থাকতে পারেন কারণ কিসমিস এলার্জির মত সমস্যা কে আরো বেশি বাড়িয়ে তোলে। এ
ছাড়াও আপনি যদি প্রতিনিয়ত মাত্রাতিরিক্ত কিসমিস খান তবে সেক্ষেত্রে আপনার
শারীরিক ওজন অনেক বেশি বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এছাড়াও যারা শ্বাসকষ্টের
রোগী রয়েছে কিংবা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের শ্বাসকষ্ট আরো বেশি
বেড়ে যেতে পারে।
এছাড়াও কিসমিস একটি মিষ্টি জাতীয় খাদ্য হওয়ায় যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের
কখনই অতিরিক্ত পরিমাণে কিসমিস খাওয়া উচিত নয়। সাধারণত কিসমিস হজমের বিঘ্ন ঘটায়
সেজন্য কিসমিস অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
দেখা দিতে পারে। এর পাশাপাশি আপনার মুখের রুচি কমে যেতে পারে। কিসমিসের অবস্থিত
চিনি এবং ক্যালরি।
যা অতিরিক্ত পরিমাণে আপনার শরীরে প্রবেশ করলে উপকারের থেকে অনেক বেশি ক্ষতি হবে
সেজন্য উপকারিতার পাশাপাশি এই অপকারিতা গুলো বা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জেনে
রাখা অত্যন্ত জরুরী। প্রতিনিয়ত ৪০ থেকে ৫০ গ্রাম কিসমিস খাওয়ার চেষ্টা করবেন
এর বেশি খেলে বা মাত্রাতিরিক্ত খেলে উপরে উল্লিখিত সমস্যা গুলি হওয়ার পাশাপাশি
বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার নিয়ম
সাধারণত কিসমিস ভিজিয়ে খেয়ে রাখলে পরবর্তী দিন খালি পেটে কিসমিস খেলে সবচেয়ে
বেশি উপকার লাভ করা যায়। অন্যান্যভাবে কিসমিস খাওয়ার তুলনাই আপনি যদি
প্রতিনিয়ত এভাবে কিসমিস খেতে পারেন তবে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দূর হওয়ার
পাশাপাশি আপনি অনেক ধরনের উপকারিতা গুলো লাভ করবেন। কিসমিস ভিজিয়ে খাওয়ার
নিয়মটি হলো আপনি যেদিন কিসমিস খাবেন
পূর্ববর্তী দিন রাতে 40 থেকে 50 গ্রাম কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরবর্তী দিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কিসমিস ভেজানো পানি পান করুন। এবং এর পরে কিসমিস
খেয়ে নিন। কিসমিস উপস্থিত ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ফাইবার পটাশিয়াম এবং আয়রন
যা আপনার উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি আপনার ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য
করবে।
শুকনো কিসমিস খেলে কি হয়
ভেজা কিসমিস খেলে যে শুধু উপকারিতা লাভ করবেন বিষয়টা তেমন আপনি শুকনো কিসমিস
খেলেও অনেক বেশি উপকারিতা লাভ করবেন এই উপকারিতা গুলোর মধ্যে তোমার উপকারিতা
গুলো হলো আপনার দেহের রক্তস্বল্পতা দূর করতে কিসমিসের বিকল্প কিছু নেই।
প্রতিনিয়ত আপনার দেহে রক্তস্বল্পতা দূর করার জন্য রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে
কিসমিস।
এছাড়াও আপনার উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ এবং ব্রেইন ভালো রাখতে অনেক
কার্যকরী।আপনাদের ডায়াবেটিস জনিত সমস্যা আছে তারা যদি স্বল্প পরিমাণে প্রতিনিয়ত
কিসমিস খান তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য সম্পর্কিত
যত সমস্যা রয়েছে সে সকল সমস্যা দূর করতে কিসমিস অনেক বেশি কার্যকরী ভূমিকা পালন
করে।
কিসমিসে উপস্থিত এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলো আপনার শরীরে ক্যান্সারের কোষ দমন করতে
সহায়তা করে। এছাড়াও আপনার দাঁত এবং হাড়ের যত্নে প্রতিনিয়ত কিসমিস খাওয়ার
অভ্যাস গড়ে তুলুন কারণ কিসমিস আপনার হার্ট এবং দাঁতের সুরক্ষায় অনেক বেশি
কার্যকরী। তবে শুকনো কিসমিস খাওয়ার থেকে ভিজিয়ে রেখে খেলে আরো বেশি উপকারীতে
লাভ করা যায়।
শেষ কিছু কথা
আশা করি ব্লগ পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত
এবং কিসমিস এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।প্রতিনিয়ত
এধরনের গুরুত্বপূর্ণ এবং অজানা তথ্য সবার আগে পেতে গুগল নিউজে ফলো করে আমাদের
সাথে থাকুন।গুগল নিউজ ফলো লিংক।
এছাড়াও আপনাদের প্রতিদিন কতটুকু কিসমিস খাওয়া উচিত এবং কিসমিস এর উপকারিতা ও
অপকারিতা গুলো সম্পর্কিত যেকোনো ধরনের মতামত এবং প্রশ্ন থাকলে আমাদের কমেন্ট
বক্সে জানাতে ভুলবেন না।আমাদের সাপোর্ট টিম খুব দ্রুত আপনার প্রশ্ন এবং মতামত এর
উত্তর প্রদান করবেন।